সুইডেন বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ যেখানে জীবনমান, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং নিরাপত্তা উচ্চমানের। অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, কর্মী ও পর্যটক সুইডেনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
সুইডেন ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে। তাই প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ থেকে সুইডেন পড়াশোনা এবং কাজের জন্য যেতে চায়। আপনারা যারা সুইডেন যেতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই আগে জানতে হবে সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে। আমরা আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে ও যাওয়ার উপায়।
সুইডেন যাওয়ার উপায়
সুইডেনে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় থাকলেও প্রতিটির জন্য নির্দিষ্ট শর্ত ও নিয়ম রয়েছে। সঠিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা থাকলে বাংলাদেশিরা সহজেই সুইডেনে পড়াশোনা, চাকরি বা স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেতে পারেন। ২০২৫ সালে সুইডেনে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা যেন যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন, তা নিশ্চিত করা জরুরি। নিচে সুইডেন যাওয়ার উপায় এবং প্রক্রিয়া দেওয়া হলো।
১. শিক্ষার জন্য (স্টুডেন্ট ভিসা)
সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বমানের শিক্ষা প্রদান করে এবং এখানে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশিরা সহজেই আবেদন করতে পারেন।
শিক্ষা ভিসার শর্তাবলী:
- সুইডেনের কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে।
- শিক্ষা ব্যয়ের জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য থাকতে হবে।
- স্টুডেন্ট ভিসার জন্য নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে।
প্রক্রিয়া:
১. সুইডেনের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা।
২. ভর্তি নিশ্চিত হলে টিউশন ফি প্রদান করা।
৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করা।
৪. সুইডেন পৌঁছানোর পর আবাসন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা থাকার প্রমাণ)।
- স্বাস্থ্যবীমা।
- পাসপোর্ট ও ছবি।
২. কর্মসংস্থানের জন্য (ওয়ার্ক ভিসা)
সুইডেনে চাকরি পাওয়ার মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসা নেওয়া সম্ভব।
ওয়ার্ক ভিসার শর্তাবলী:
- সুইডেনের কোনো নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার থাকতে হবে।
- মাসিক নির্দিষ্ট পরিমাণ বেতন নিশ্চিত হতে হবে।
- নিয়োগকর্তাকে সুইডেনের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
প্রক্রিয়া:
১. সুইডেনের কোনো প্রতিষ্ঠানের চাকরির জন্য আবেদন করা।
2. চাকরির অফার পাওয়ার পর নিয়োগকর্তা ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করবে।
৩. অনুমোদন পাওয়ার পর ভিসার জন্য আবেদন করা।
৪. সুইডেনে পৌঁছে কাজ শুরু করা।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- চাকরির চুক্তিপত্র।
- বেতন ও শর্তাবলী সংক্রান্ত নথি।
- পাসপোর্ট ও ছবি।
৩. পর্যটন ও সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের জন্য (শেনজেন ভিসা)
যারা সুইডেনে অল্প সময়ের জন্য যেতে চান, তারা শেনজেন ভিসার মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারেন।
শেনজেন ভিসার শর্তাবলী:
- পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য থাকতে হবে।
- ভ্রমণের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট হতে হবে।
প্রক্রিয়া:
১. শেনজেন ভিসার জন্য সুইডেন দূতাবাসে আবেদন করা।
২. হোটেল বুকিং ও বিমানের টিকিট নিশ্চিত করা।
৩. পর্যাপ্ত ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদান করা।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- ভ্রমণের পরিকল্পনা।
- হোটেল ও ফ্লাইট বুকিংয়ের প্রমাণ।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- স্বাস্থ্যবীমা।
৪. স্থায়ী বসবাসের অনুমতি (পিআর) ও নাগরিকত্ব
সুইডেনে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি (Permanent Residency – PR) পেতে হলে দীর্ঘ সময় ধরে বৈধভাবে সেখানে বসবাস করতে হয়।
পিআর ও নাগরিকত্বের শর্তাবলী:
- বৈধ ওয়ার্ক পারমিট বা স্টুডেন্ট ভিসায় নির্দিষ্ট সময় ধরে থাকা।
- সুইডিশ ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা থাকা।
- কোনো ফৌজদারি অপরাধে জড়িত না থাকা।
প্রক্রিয়া:
১. নির্দিষ্ট সময় ধরে বৈধ ভিসায় সুইডেনে বসবাস করা।
২. পিআর-এর জন্য আবেদন করা।
৩. নির্দিষ্ট বছর পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা।
সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশের অনেক মানুষ আছে যারা সুইডেন যেতে যায়। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানে না যে সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে। সুইডেন একটি ইউরোপের দেশ যার কারণে অন্যান্য দেশের তুলনায় সুইডেন যেতে টাকা একটু বেশি লাগে।
সুইডেন কয়েক রকম ভিসা চালু আছে বিভিন্ন ভিসার খরচ বিভিন্ন রকম। নিচে উল্লেখ করা হলো সুইডেন কোন ভিসায় কত টাকা লাগতে পারে।
- সুইডেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যদি যান তাহলে আপনার ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
- সুইডেন ভিসা যদি চান তাহলে আপনার ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
- সুইডেন স্টুডেন্ট ভিসায় যদি যান তাহলে আপনার ৪ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
সুইডেন যেতে কি কি লাগে
আপনি যদি সুইডেন যেতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই বৈধ ভিসার মাধ্যমে সে দেশে প্রবেশ করতে হবে। আপনি যদি বৈধভাবে সুইডেন যেতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। আপনি যে বিষয়ে যেতে চান সেই ভিসা সিলেক্ট করে তারপর আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পূর্বে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে সেগুলো আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে। নিচে উল্লেখ করা হলো সুইডেন যেতে কি কি লাগে।
1. ভিসার আবেদনপত্র।
2. ৬ মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট ।
3. দুটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
4. ভ্রমণ বীমা।
5. থাকার বাসস্থানের প্রমাণ।
6. আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ ।
7. কাজের ছুটির প্রমাণ।
8. শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ ।
9. কাজের দক্ষতা সার্টিফিকেট
10. কাজের অফার লেটার।
11. কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট।
12. ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট ।
13. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স।
14. মেডিকেল সনদ।
FAQ
- ধাপ 1: একটি কাজের প্রস্তাব আছে
- ধাপ 2: আপনার নিয়োগকর্তা আবেদন শুরু করবেন
- ধাপ 3: আপনি আপনার আবেদন সংক্রান্ত একটি ইমেল পাবেন
- ধাপ 4: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করুন
- ধাপ 5: পরিশোধ করুন এবং জমা দিন
- সুইডেনের ভিসা আবেদনের জন্য কত সময় লাগে তা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে। তবে, প্রক্রিয়াকরণের সময় প্রায় ১০ থেকে ১৫ কার্যদিবস সময় নিতে পারে।
স্টুডেন্ট ভিসায় সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে
- বাংলাদেশ থেকে সুইডেন পর্যন্ত যেতে আবেদন ফিস,টিউশন ফি,এয়ার টিকেট সহ টোটাল প্রায় ১০ লাখের মত খরচ হবে ।
সুইডেন ট্যুরিস্ট ভিসা করতে কত ব্যাংক ব্যালেন্স লাগে?
সুইডেন যেতে কত বছর বয়স লাগে?
- সুইডেনে যেতে শিক্ষার্থী ও ভ্রমণকারীদের নির্দিষ্ট কোন বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া নেই। তবে সুইডেন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করতে আবেদনকারীদের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর হতে হবে। ই
শেষ কথা
সুইডেন যেতে কত টাকা লাগে আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন। আমরা একটা ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিছু টাকা কম বেশি লাগতে পারে। আপনারা যদি এরকম আরো তথ্য পেতে চান আমাদের সাথেই থাকুন।