কম্পিউটারের ৫টি ক্ষতিকর সফটওয়্যার এর নাম

বর্তমান এই আধুনিক যুগে কম্পিউটার ব্যবহার করে না, এমন মানুষ পাওয়াই যাবে না। আধুনিক এই যুগে প্রায় সব কাজের ক্ষেত্রেই মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে। কম্পিউটারের অনেক ভালো দিক রয়েছে তেমনি আবার অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আমরা কম্পিউটারে কোন কাজ করতে গেলে বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করি। এই সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে অনেক সফটওয়্যার আছে যেগুলো কম্পিউটারের জন্য অনেক ক্ষতিকর। আমরা অনেকেই হয়তো এটা জানি না কোন সফটওয়্যার গুলো কম্পিউটারের জন্য ক্ষতিকর। আজকের এই পোস্টে তাই আপনাদের জানাবো কম্পিউটারের পাঁচটি ক্ষতিকর সফটওয়্যার এর নাম।

কম্পিউটারের ৫টি ক্ষতিকর সফটওয়্যার

আধুনিক এই যুগে প্রায় প্রত্যেকে কম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে। বর্তমান সময়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন কাজ করে মানুষ। এই কাজ করার জন্য অনেক সময় বিভিন্ন রকম সফটওয়্যার এর প্রয়োজন হয়। কম্পিউটারের জন্য অনেক সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো অনেক ক্ষতিকর। অনেকেই হয়তো এই ক্ষতিকর সফটওয়্যার এর নামগুলো এবং কম্পিউটারের কি ক্ষতি করতে পারবে এটা জানে না। তাই এই পোস্টে আপনাদের জানাবো কম্পিউটারের পাঁচটি ক্ষতিকর সফটওয়্যার এর নাম এবং কিভাবে এই সফটওয়্যার গুলো কম্পিউটারের ক্ষতি করে।

কিলগার

কিলগার সফটওয়্যার কম্পিউটারে মোকাবেলা করে, ব্যবহারকারীর তথ্য প্রাপ্ত করে, সাংবিধানিক মেয়াদের সাথে অসম্মানতা সৃষ্টি করে, সিস্টেমের সম্পূর্ণ পরিসর অস্থিতিশীল করে, মানবিক বা আর্থিক ক্ষতি করতে পারে। কিলগার সফটওয়্যার কম্পিউটারে ক্ষতি করতে পারে এবং তা নিম্নলিখিত উপায়ে করে তা হতে পারে:

  • তথ্য চুরি: কিলগার সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে, যেমন ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকিং তথ্য, পাসওয়ার্ড, ইমেইল ইত্যাদি।
  • হার্মফুল কোড অথবা ম্যালওয়্যার প্রস্তুত করা: কিলগার সফটওয়্যার ম্যালওয়্যার তৈরি করে এবং সেটি ব্যবহারকারীদের কম্পিউটারে সন্দেহজনক অবস্থানে পাঠাতে পারে।
  • সিস্টেমে নির্দিষ্ট ধরনের মারাত্মক পরিবর্তন করা: এটি কম্পিউটারে বিভিন্ন প্রকারের পরিবর্তন করে যেমন ফাইল ধ্বংস করে, সিস্টেম ফাইল বা অ্যাপ্লিকেশন সাধারণত সার্ভার এবং নেটওয়ার্ক কন্ফিগারেশনে বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সিস্টেমে আক্রমণ করে।
  • সেন্সিটিভ ডেটা বহনে অসুরক্ষিত অবস্থায় এনক্রিপ্টেড: কিলগার সফটওয়্যার এনক্রিপ্ট করা অথবা অসুরক্ষিত ডেটা সংগ্রহ করতে পারে, যা ব্যবহারকারীদের গোপন তথ্যের সম্পর্কে বেশি ক্ষতি করতে পারে।
  • রিমোট অ্যাক্সেস: কিলগার সফটওয়্যার রিমোটভাবে কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারে এবং নিয়ন্ত্রণ পেতে পারে, যা ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তিগত তথ্য অথবা সিস্টেমে অন্য ধরনের ক্ষতি করতে পারে।

ম্যালওয়্যার (Malware)

ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকারক সফটওয়্যার বিভিন্ন উপায়ে কম্পিউটারে ক্ষতি করতে পারে। এটি নিম্নলিখিত উপায়ে ক্ষতি করতে পারে:

  • তথ্য চুরি: ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে, যেমন ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যাংকিং তথ্য, ইমেইল ইত্যাদি। এটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য অথবা ব্যবহারকারীর সংক্রান্ত গোপন তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
  • ক্রাইপ্টো মাইনিং: ম্যালওয়্যার ক্রাইপ্টোকারেন্সি মাইনিংের জন্য কম্পিউটারের সংগ্রহকৃত সম্পদ এবং সাধারণ সিস্টেম সম্পূর্ণ অপব্যবহার করে সহযোগিতা করতে পারে।
  • র্যানসমওয়্যার (Ransomware): এটি কম্পিউটারের ফাইল ও ডেটা এনক্রিপ্ট করে এবং সেগুলির মুক্তিযোগ্যতা ফেরত দেওয়ার আগে মূল্য পরিশোধ করার জন্য ব্যবহারকারীর প্রতি অতিরিক্ত টাকা চায়।
  • কীলগার ফাইলের ধ্বংস: ম্যালওয়্যার কম্পিউটারের সিস্টেমের ফাইল বা মৌলিক অ্যাপ্লিকেশন ধ্বংস করতে পারে, যা সিস্টেমে আক্রমণ করে।
  • কম্পিউটার নির্দিষ্ট অবস্থানে আক্রমণ: ম্যালওয়্যার কম্পিউটারে নির্দিষ্ট অবস্থানে আক্রমণ করে এবং সেটির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।
  • সিস্টেমের সম্পূর্ণ পরিসর অস্থিতিশীল করা: ম্যালওয়্যার সিস্টেমের সম্পূর্ণ পরিসর অস্থিতিশীল করতে পারে, যা সিস্টেমের কার্যক্ষমতা হ্রাস করে।

ফিশিং সাইট

ফিশিং সাইট হল এমন একটি ওয়েবসাইট যেখানে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রাপ্ত করার জন্য প্রতারণা প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এই ধরনের সাইট অস্বীকৃত সাইট হিসেবে সনাক্ত করা যায়, কারণ এগুলো সাধারণত বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটের সাথে অত্যন্ত সমতুল্য দেখতে পারে। ফিশিং সাইট ব্যবহার করে সাধারণত নিম্নলিখিত উপায়ে ক্ষতি করা হতে পারে:

  • ব্যক্তিগত তথ্য প্রাপ্তব্য: ফিশিং সাইট মাসিক বা নির্দিষ্ট ইভেন্ট সংক্রান্ত ব্যক্তিগত তথ্য প্রাপ্ত করতে ব্যবহারকারীদের প্রতারিত করতে পারে, যেমন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের ব্যবহারকারীর নাম, পাসওয়ার্ড, ব্যক্তিগত তথ্য, ক্রেডিট কার্ড তথ্য ইত্যাদি।
  • আইডেন্টিটি চুরি: ফিশিং সাইট ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের আইডেন্টিটি চুরি করা হতে পারে, যা পরবর্তীতে অপরাধীরা অপরাধে ব্যবহার করতে পারে।
  • ফিশিং ক্যাম্পেইন: এটি মাসিক ইমেল বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টিং সাহায্যে ক্ষতিকারক লিংক বা ফাইল দিয়ে ফিশিং ক্যাম্পেইন চালিয়ে যেতে পারে।
  • ম্যালওয়্যার ইনস্টলেশন: ফিশিং সাইট এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অজানা সফটওয়্যার ইনস্টল করানো হতে পারে, যা তাদের সিস্টেমে ম্যালওয়্যার বা অন্যান্য ক্ষতিকর প্রোগ্রাম ইনস্টলেশনে সহায়ক হতে পারে।
  • প্রতারণা: কিছু ফিশিং সাইট ব্যবহারকারীদেরকে কুকি বা বিজ্ঞাপন ব্যবহারে প্রতারিত করে যাতে তারা এদের সাথে নিজেদের সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন এবং তাদের ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা স্থায়ীভাবে ভ্রমণ করে তাদের আইডেন্টিটি প্রকাশ করতে পারেন।

স্পাইওয়্যার (Spyware)

স্পাইওয়্যার হল ম্যালওয়্যারের একটি রূপ যা একটি কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইসে ব্যবহারকারীর ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে তাদের জ্ঞান বা সম্মতি ছাড়াই তথ্য সংগ্রহ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। স্পাইওয়্যার সফটওয়্যার কম্পিউটারে বিভিন্ন উপায়ে ক্ষতি করতে পারে। নিম্নলিখিত উপায়ে এটি ক্ষতি করতে পারে:

  • ব্যক্তিগত তথ্য প্রাপ্তব্য: স্পাইওয়্যার সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে, যেমন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের ব্যবহারকারীর নাম, পাসওয়ার্ড, ব্যক্তিগত তথ্য, ক্রেডিট কার্ড তথ্য ইত্যাদি।
  • ব্রাউজার ইতিহাস এবং কুকি অ্যাক্যাস: স্পাইওয়্যার সফটওয়্যার ব্রাউজার ইতিহাস এবং কুকি প্রবেশ করতে পারে, যাতে ব্যবহারকারীর অনুভূতি এবং অনুভূতিগুলির ভিত্তিতে নিজেরা নিজেদের বিজ্ঞাপন এবং পোপ-আপ অনুভুতি নির্মাণ করতে পারেন।
  • সিস্টেমে অতিরিক্ত প্রোগ্রাম ইনস্টল: কিছু স্পাইওয়্যার সফ্টওয়্যার অপরাধীদের সিস্টেমে নিজেরা অজানা অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করতে পারে, যা সিস্টেমে ম্যালওয়্যার বা অন্যান্য ক্ষতিকর প্রোগ্রাম ইনস্টল করতে সহায়ক হতে পারে।
  • সিস্টেমে ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট অনুলিপি: কিছু স্পাইওয়্যার সফ্টওয়্যার ব্যবহারকারীর নির্দিষ্ট অনুলিপি স্থাপন করে যাতে ব্যবহারকারীর সম্পদ এবং সিস্টেমে যেতে পারে এবং তাদের ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা স্থায়ীভাবে ভ্রমণ করে তাদের আইডেন্টিটি প্রকাশ করতে পারে।

ডেনিয়াল অফ সার্ভিস (Denial of Service – DoS)

ডেনাইয়াল অফ সার্ভিস” সফটওয়্যার হ’ল এমন একটি প্রোগ্রাম যা একটি সার্ভিসের ব্যবহার অসম্ভব করে করে দেয়া অথবা সংক্রান্ত তথ্যের অ্যাক্সেস বন্ধ করে দেয়। এই প্রকারের অ্যাট্যাকে সাধারণত নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত সার্ভিস বা সিস্টেমের ক্ষতি হয়ে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে, ডেনাইয়াল অফ সার্ভিস সফটওয়্যার কম্পিউটারে নিম্নলিখিত ক্ষতি করতে পারে:

  • নেটওয়ার্ক সার্ভিস বন্ধ করা: ডেনাইয়াল অফ সার্ভিস সফটওয়্যার কে নেটওয়ার্ক সার্ভিসের সাথে যুক্ত করা হতে পারে এবং সেটি সংযুক্ত নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত সার্ভিসের কাছে অ্যাক্সেস নিষেধ করতে পারে। এটি নেটওয়ার্ক কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এবং অন্যান্য নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের কার্যক্ষমতা স্থায়ীভাবে আপনার নেটওয়ার্ক অভিজ্ঞতায় আঘাত করতে পারে।
  • অ্যাপ্লিকেশন সার্ভিস বন্ধ করা: কিছু ডেনাইয়াল অফ সার্ভিস সফটওয়্যার ক্যাপাবিলিটি বা এক্সেসের জন্য বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সার্ভিস নিষ্ক্রিয় করতে পারে, যা ব্যবহারকারীর কার্যক্ষমতা হ্রাস করে সার্ভিস প্রভাবিত করতে পারে এবং কম্পিউটারে আইসোলেট করতে পারে।
  • সিস্টেম অপারেটিং সিস্টেম ক্ষতি: কিছু ক্ষেত্রে, ডেনাইয়াল অফ সার্ভিস সফটওয়্যার একটি ক্রিটিক্যাল সিস্টেম সার্ভিস বন্ধ করতে পারে, যা কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা হ্রাস করতে পারে এবং অস্থিতিশীলতা সংক্রান্ত সমস্যা উত্পন্ন করতে পারে।

উপরের এই ৫ টি সফটওয়্যার কম্পিউটারে ক্ষতি করতে পারে। বিশেষত, এই সফটওয়্যারগুলো ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য অপরিচিত ব্যক্তিদের হাতে প্রাপ্ত করতে পারে এবং তা ব্যবহার করে অসম্মানতা সৃষ্টি করতে পারে।

শেষ কথা

বর্তমান এই আধুনিক যুগে কম্পিউটার সবাই ব্যবহার করে এ কারণে কম্পিউটারের সফটওয়্যার গুলো অনেক বেড়ে গিয়েছে। এজন্য অনেক ক্ষতি করার সফটওয়্যার গুলো বেড়ে গেছে। আজকের এই পোস্টে কম্পিউটারের পাঁচটি ক্ষতিকর সফটওয়্যার এর নাম জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা সবাই জানতে পেরেছেন কম্পিউটারের পাঁচটি ক্ষতিকর সফটওয়্যার এর নাম।

By tech-dustbin

এই ওয়েবসাইট মূলত আমার ইন্টারনেট জ্ঞান পরিচর্চা এবং তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে । আমি চেষ্টা করি প্রতিদিন টেকনোলজি নিয়ে নতুন কিছু শিখতে এবং তা এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে সবার সাথে শেয়ার করতে । নতুন নতুন তথ্য জানতে যারা পছন্দ করেন তারা টেক ডাস্টবিন সাইট ফলো করতে পারেন।