সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

বর্তমান সময়ে সাইপ্রাস প্রবাসীদের জন্য অন্যতম একটি রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রে কাজের চাহিদা এবং কাজের মান অনেক উন্নত। যার কারণে বাংলাদেশের অনেক মানুষ সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চান। বাংলাদেশের অনেক মানুষ আছে যারা ভিসা নেওয়ার ক্ষেত্রে ভুল করে থাকেন। আর সেই ভুল পরবর্তী সময়ে আপনার জন্য অনেক সমস্যা ডেকে আনে। যার কারণে আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে।

সাইপ্রাসের ভিসা সাধারণত দুই ধরনের হয় প্রথম গ্রিক ভিসা এবং আরেকটি তুর্কি ভিসা। অনেক মানুষেরই মনে প্রশ্ন থাকে তাহলে আমরা কোন ভিসায় সাইপ্রাস যাব। আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত আপনাদের সাথে আলোচনা করব সাইপ্রাস এর আপনার জন্য কোন ভিসা ভালো হবে।

সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

বর্তমান সময়ে সাইপ্রাসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খোলা রয়েছে। আপনারা যদি এই ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় প্রাশ যেতে পারেন তাহলে আপনি ভালো পরিমাণে বেতন পাবেন। সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে আপনাদের আরেকটি তথ্য দিয়ে রাখি এই দেশের ভিসা পেতে আপনাকে অনেক অপেক্ষা করতে হবে। প্রায় এক বছরের বেশি আপনাকে সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন সাইপ্রাসের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে।

তুর্কি সাইপ্রাস যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশ থেকে তুর্কি সাইপ্রাস যেতে ন্যূনতম ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগে। আর আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় তুর্কি সাইপ্রাস যেতে চান তাহলে খরচ পড়বে আনুমানিক ২ থেকে ৩ লাখ টাকা।

গ্রিক সাইপ্রাস যেতে কত টাকা লাগে

গ্রিক সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে সাধারনত ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকার মতন খরচ হয়। আর আপনি যদি টুরিস্ট ভিসায় যান তাহলে সব মিলিয়ে, ৭ দিনের একটি সাধারণ ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ থেকে গ্রিক সাইপ্রাসে যেতে আপনার মোট খরচ গড়ে ১,৫০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ টাকা হতে পারে। এটি ভ্রমণের ধরন, থাকার মান এবং অন্যান্য সুবিধার ওপর ভিত্তি করে কম বা বেশি হতে পারে।

সাইপ্রাস ভিসা আবেদন

সাইপ্রাসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম সাধারণত সরাসরি আবেদনকারী দ্বারা করা যায় না। বরং সাইপ্রাসে অবস্থিত নিয়োগকর্তা আপনার জন্য আবেদন করে থাকে। তবে প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে জানতে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো অনলাইনে করার কিছু ধাপ রয়েছে:

১. চাকরির অফার এবং নিয়োগকর্তা কর্তৃক আবেদন:

  • সাইপ্রাসে কাজের জন্য প্রথমে একটি চাকরির অফার পেতে হবে। নিয়োগকর্তা (employer) আপনার জন্য ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করবেন সাইপ্রাসের Department of Labour বা Civil Registry and Migration Department-এ।
  • নিয়োগকর্তা এই আবেদন অনলাইনে জমা দিতে পারেন SISNET (Social Insurance Services System) এর মাধ্যমে।

২. নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে নিয়োগকর্তা আবেদন করবেন:

  • Nicosia District Immigration Office বা অন্যান্য স্থানীয় অভিবাসন অফিসের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়োগকর্তা ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করতে পারেন। এজন্য:
    • Civil Registry and Migration Department ওয়েবসাইটে নিয়োগকর্তা প্রয়োজনীয় নথি এবং আবেদন ফর্ম অনলাইনে জমা দেন।
    • আবেদনটি অনুমোদিত হলে, নিয়োগকর্তা আপনাকে নথি পাঠাবে যা আপনি সাইপ্রাস দূতাবাসে ভিসা আবেদন করতে ব্যবহার করতে পারবেন।

৩. ওয়ার্ক পারমিটের জন্য প্রয়োজনীয় নথি:

  • চাকরির অফার বা চুক্তি।
  • পাসপোর্টের কপি।
  • স্বাস্থ্য পরীক্ষা রিপোর্ট।
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • ফটো।
  • ভিসা আবেদন ফি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি।

৪. অনলাইন ভিসা আবেদন:

  • নিয়োগকর্তার ওয়ার্ক পারমিট আবেদন অনুমোদনের পর, আপনি সাইপ্রাস দূতাবাসের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ভিসার আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশের সাইপ্রাস দূতাবাস বা নিকটস্থ দূতাবাসের ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় ফর্ম ও নথি জমা দিতে হবে।
  • Cyprus Visa Application Form ওয়েবসাইটে আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করে, প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করতে হবে।

৫. ভিসা সাক্ষাৎকার এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা:

  • দূতাবাসে ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার পর একটি সাক্ষাৎকারের জন্য সময় নির্ধারিত হতে পারে।
  • স্বাস্থ্য পরীক্ষা রিপোর্টও জমা দিতে হবে, যা দূতাবাস বা নির্দিষ্ট মেডিকেল সেন্টারের মাধ্যমে করা হয়।

অনলাইন আবেদনের প্রধান ধাপগুলো সংক্ষেপে:

  • চাকরি পাওয়া এবং নিয়োগকর্তা কর্তৃক ওয়ার্ক পারমিটের অনলাইন আবেদন।
  • দূতাবাসে ভিসা আবেদন অনলাইনে জমা দেওয়া।
  • ভিসা আবেদন প্রসেসিংয়ের পর ভিসা মঞ্জুর হলে সাইপ্রাসে যাওয়া।

আপনার আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্যের জন্য সাইপ্রাসের সিভিল রেজিস্ট্রি এবং মাইগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এবং স্থানীয় সাইপ্রাস দূতাবাসের ওয়েবসাইট পরিদর্শন করুন।

সাইপ্রাস ভিসা ফি কত?

সাইপ্রাসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য ভিসা ফি সাধারণত €60 থেকে €80 ইউরো (প্রায় ৭,০০০ থেকে ৯,০০০ টাকা) হতে পারে। তবে এই ফি দেশের দূতাবাস, ভিসার ধরন, এবং আবেদন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।

ভিসা আবেদন করার আগে সঠিক ফি জানতে সাইপ্রাসের স্থানীয় দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা উচিত, কারণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিসা ফি পরিবর্তিত হতে পারে।

সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে কি কি কাগজপত্র দরকার

সাইপ্রাসে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে আপনাকে বেশ কিছু নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এই কাগজপত্রগুলো মূলত আপনার যোগ্যতা, চাকরি, এবং নিরাপত্তার তথ্য নিশ্চিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। নিচে সাধারণত যে নথিপত্রগুলো জমা দিতে হয়, তার একটি তালিকা দেওয়া হলো:

  • বৈধ পাসপোর্টের কপি, যা আবেদন করার সময় কমপক্ষে ২ বছরের মেয়াদ থাকতে হবে।
  • সাইপ্রাসে নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে একটি বৈধ চাকরির অফার লেটার বা চাকরির চুক্তি (Employment Contract) জমা দিতে হবে। এটি আপনার ওয়ার্ক পারমিট আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
  • সাইপ্রাসে আপনার নিয়োগকর্তা আপনার জন্য ওয়ার্ক পারমিট আবেদন করলে এবং এটি অনুমোদিত হলে, তার একটি কপি।
  • সাধারণত ২-৪টি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি প্রয়োজন হবে।
  • আপনার নিজ দেশের একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট যা প্রমাণ করে যে আপনি কোনো অপরাধে অভিযুক্ত নন।
  • একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট যা আপনার স্বাস্থ্যগত অবস্থার প্রমাণ দেয়। কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ টেস্ট যেমন টিউবারকিউলোসিস (TB), HIV, বা হেপাটাইটিসের টেস্টের রিপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে।
  • আপনার বিমানের টিকিটের কপি (যদি ইতোমধ্যে কেনা হয়ে থাকে)।
  • সাইপ্রাসে থাকার সময় আপনি যদি কোনো দুর্ঘটনা বা স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েন, সেক্ষেত্রে একটি বৈধ ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স প্রয়োজন হতে পারে। এটি আপনার আবেদন প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে।
  • সাইপ্রাসে আপনার থাকার ব্যবস্থা কোথায় তা প্রমাণ করার জন্য হোটেল বুকিং কনফার্মেশন বা নিয়োগকর্তা যদি বাসস্থানের ব্যবস্থা করে থাকে তার প্রমাণ।
  • যদি আপনার চাকরি নির্দিষ্ট কোনো দক্ষতার ওপর নির্ভর করে, সেক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
  • সাইপ্রাসে পৌঁছানোর পর বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ এবং ছবি) নিবন্ধনের জন্য অনুরোধ করা হতে পারে।

তুর্কি সাইপ্রাস বেতন কত

তুর্কি সাইপ্রাসে (উত্তর সাইপ্রাস) বেতন বিভিন্ন পেশা, কাজের ধরণ, অভিজ্ঞতা এবং কাজের জায়গার উপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়। তুর্কি সাইপ্রাসে সাধারণত মাসিক গড় বেতন প্রায় ৪,০০০ থেকে ৮,০০০ তুর্কি লিরা হতে পারে।

বাংলাদেশি টাকায় তুর্কি লিরার মান জানার জন্য আপনি বর্তমান বিনিময় হার অনুসারে হিসাব করতে পারেন। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তুর্কি লিরা এবং বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার প্রায় ১ তুর্কি লিরা = ৩৮-৪০ বাংলাদেশি টাকা

  • ৪,০০০ তুর্কি লিরা = ১,৫২,০০০ – ১,৬০,০০০ টাকা।
  • ৬,০০০ তুর্কি লিরা = ২,২৮,০০০ – ২,৪০,০০০ টাকা।
  • ৮,০০০ তুর্কি লিরা = ৩,০৪,০০০ – ৩,২০,০০০ টাকা।

গ্রিক সাইপ্রাস বেতন কত

গ্রিক সাইপ্রাস (সাইপ্রাসের দক্ষিণ অংশ) বেতন বিভিন্ন পেশা, কাজের অভিজ্ঞতা, এবং সেক্টরের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। সাইপ্রাসে সাধারণত ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতোই বিভিন্ন সেক্টরে বেতনের হার রয়েছে। সাইপ্রাসে গড় মাসিক বেতন সাধারণত €১,২০০ থেকে €২,০০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে, যা পেশা ও কাজের ওপর নির্ভর করে বাড়তে বা কমতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় বেতন: বর্তমানে (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর অনুযায়ী) ১ ইউরো = প্রায় ১১৭-১২০ টাকা। এর ভিত্তিতে সাইপ্রাসের গড় বেতনের হিসাব হবে:

  • €১,২০০ ইউরো = প্রায় ১,৪০,০০০ – ১,৪৪,০০০ টাকা।
  • €২,০০০ ইউরো = প্রায় ২,৩৪,০০০ – ২,৪০,০০০ টাকা।
  • €৩,৫০০ ইউরো = প্রায় ৪,১০,০০০ – ৪,২০,০০০ টাকা।

শেষ কথা

আজকের এই পোস্টে সাইপ্রাস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনারা সবাই জানতে পেরেছেন সাইপ্রাস ওয়ার্ক ভিসা সম্পর্কে। আপনাদের কারো মনে যদি প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

By tech-dustbin

এই ওয়েবসাইট মূলত আমার ইন্টারনেট জ্ঞান পরিচর্চা এবং তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে । আমি চেষ্টা করি প্রতিদিন টেকনোলজি নিয়ে নতুন কিছু শিখতে এবং তা এই ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে সবার সাথে শেয়ার করতে । নতুন নতুন তথ্য জানতে যারা পছন্দ করেন তারা টেক ডাস্টবিন সাইট ফলো করতে পারেন।