আমাদের আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আলোচনা করব। আপনারা যারা ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য ২০২৪ সাল এবং ২০২৫ সাল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলেই জানি করোনাভাইরাসের কারণে ইউরোপের দেশগুলোর বেশি ক্ষতি হয়েছিল। এজন্য কানাডার সরকার বাহিরের দেশগুলো থেকে তাদের দেশে কর্মী নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা করেছে। কানাডা সরকার ২০২২ সালে ঘোষণা দিয়েছিল, ২০২৩, ২০২৪, ২০২৫ সালে বাহিরের দেশ থেকে ১২ লক্ষ কর্মী নিয়োগ দিবে। বর্তমানে সেটা বাড়িয়ে ১৬ লক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়ার চিন্তা করেছে কানাডা সরকার এবং ২০২৬ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই কাজের উদ্দেশ্যে বাহিরের দেশগুলোতে যায়। অনেকেরই ছতাকে ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়া। কারণ ইউরোপের দেশগুলোর কাজের মান অনেক উন্নত। আপনারা যারা কানাডা যেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি। এই পোস্টে আলোচনা করব কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
কানাডার সরকার সহজে বাহিরের কান্ট্রি থেকে কর্মী নিয়োগ দেয় না। কিন্তু বর্তমান সময়ে কানাডায় কর্মী সংকট যার কারণে তারা বাহির থেকে প্রায় ১৬ লক্ষ কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। বর্তমান সময়ে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় সরাসরি যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কানাডা যদি কাজ করার উদ্দেশ্যে যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা লাগবে।
আপনি যদি কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যেতে চান এর জন্য আপনার জব লেটার এবং LMIA একটি কাগজ লাগবে। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আমরা কিভাবে কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য জবের অফার লেটার পাব। কানাডায় জব পেতে পারেন এই www.indeed.com ওয়েবসাইট থেকে। এই ওয়েবসাইট থেকে আপনি কানাডার জব এর অপারেটর পেয়ে যাবেন আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী। জবের অফার লেটার পাওয়ার পর আপনি কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি লাগে
কানাডা হলো ইউরোপের একটি দেশ। বাংলাদেশের অনেক মানুষের স্বপ্ন থাকে কানাডা যাওয়ার। বর্তমান সময়ে আপনারা সেই স্বপ্নটাকে পূরণ করতে পারেন এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। কারণ কানাডা অনেক উন্নত যার কারণে নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকলে আপনি কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যেতে পারবেন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে।
- বৈধ পাসপোর্ট
- জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্ম নিবন্ধন
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- শিক্ষার সনদপত্র
- কাজের অভিজ্ঞতা প্রমাণপত্র
- চাকরির অফার লেটার
- LMIA কপি
- বয়স ৪৫ বছরের নিচে
- ভিসা আবেদন ফরম
- ভিসা আবেদন ফি
- ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট
- মেডিকেলে রিপোর্ট
- করোনা টিকা সনদ
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম
আপনারা যারা কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই আগে কানাডা ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করার পর যদি সে আবেদন কানাডা সরকার অনুমোদন দিয়ে থাকে তাহলেই আপনি কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যেতে পারবেন। অনেকেই গুগলে অনুসন্ধান করে থাকেন কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিভাবে আবেদন করে। তাই নিচে কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিভাবে আবেদন করবেন সেই নিয়ম জানাবো।
- কানাডার ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে যান।
- প্রোফাইল তৈরি করুন।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
- আবেদন ফি প্রদান করুন। ফি সাধারণত প্রায় ১৫৫ কানাডিয়ান ডলার হয়।
- আবেদন জমা দেওয়ার পর, আপনাকে বায়োমেট্রিক্স (ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি) প্রদান করতে হবে।
- কিছু ক্ষেত্রে আপনাকে একটি মেডিকেল পরীক্ষা করতে হতে পারে। যদি প্রয়োজন হয়, আপনাকে নির্দেশনা দেওয়া হবে কিভাবে এবং কোথায় এই পরীক্ষা করতে হবে।
- আপনার আবেদন ট্র্যাক করতে IRCC ওয়েবসাইটে লগইন করুন এবং আপনার আবেদন স্ট্যাটাস চেক করুন।
- আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে, আপনাকে একটি Introduction Letter পাঠানো হবে।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ কত
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন ফি ১৫৫ কানাডিয়ান ডলার (CAD) যা প্রায় ১২,৫০০ বাংলাদেশি টাকা (BDT) হতে পারে। তবে, টাকার মানের হারের পরিবর্তনের কারণে এই খরচ কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।
কানাডায় কাজের ভিসা পেতে অনেক ধরণের খরচ হতে পারে, যেমন ভিসা আবেদন ফি, মেডিকেল পরীক্ষা, পুলিশ সার্টিফিকেট, ট্রান্সলেশন ফি, ভিসা ইন্টারভিউ খরচ, যাতায়াত ইন্সুরেন্স, আপাতত কাজের জন্য যাতায়াত ও বসতি খরচ, প্রযুক্তিগত খরচ ইত্যাদি। এই সব খরচের বিস্তারিত নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
খরচের ধরন | প্রায় খরচ (CAD) | প্রায় খরচ (BDT) |
---|---|---|
ভিসা আবেদন ফি | ১৫৫ | ১২,৫০০ – ১৩,২০০ |
বায়োমেট্রিক ফি | ৮৫ | ৬,৮০০ – ৭,২০০ |
মেডিকেল পরীক্ষা | ২০০ – ৩৫০ | ১৬,০০০ – ২৮,০০০ |
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট | ০ (স্থানীয়) | ৫০০ – ১০০০০ |
ট্রান্সলেশন ফি | ৫০ – ২০০ | ৪,০০০ – ১৬,০০০ |
ভিসা ইন্টারভিউ খরচ | ০ – ১০০ | ০ – ৮,০০০ |
যাতায়াত ইন্সুরেন্স | ৫০ – ১০০ | ৪,০০০ – ৮,০০০ |
আপাতত কাজের জন্য যাতায়াত ও বসতি খরচ | ২০০০ – ৫০০০ | ১,৬,০০০ – ৪,০০০০ |
প্রযুক্তিগত খরচ | পর্যাপ্ত (বিভিন্ন) | পর্যাপ্ত (বিভিন্ন) |
এই হিসাব আনুমানিক এবং বর্তমান বিনিময় হারের উপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। সঠিক খরচ জানার জন্য আবেদন করার আগে বর্তমান মুদ্রা বিনিময় হার যাচাই করে নিন।
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট দেখতে কেমন
আপনাদের মধ্যে এমন অনেকে আছে যারা দেখতে চান কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেখতে কেমন। আপনাদের জন্য কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার একটি ছবি নিচে দেওয়া হল।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে কানাডার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি আপনাদের। আশা করি আপনাদের সবাইকে জানাতে পেরেছি কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সালের সকল তথ্য। এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।