ইউরোপের যতগুলো দেশে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার একটু নূন্যতম সহজ সেই দেশ হলো পর্তুগাল অন্যতম, আর এই বিষয়টি হয়তো আমরা সবাই জানি ২০২২ এবং ২০২৩ পর্তুগাল ওয়ার্ক ভিসায় রেকর্ড করেছে। বিগত কয়েক বছরে ইউরোপের কোন দেশে পর্তুগালের মতো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেয়নি ২০২২ এবং ২০২৩ এ।
বর্তমান সময়ে পর্তুগালে কাজের চাহিদা অনেক বেশি এবং শ্রমিকের সংখ্যা কম যার কারণে তারা বিভিন্ন কান্ট্রিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিচ্ছে। আপনারা চাইলে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে পারবেন। আজকের এই পোস্টে আলোচনা করব পর্তুগালের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ নিয়ে। কিভাবে ভিসা পাবেন, কত খরচ হবে এবং সময় কেমন লাগবে বিস্তারিত সবকিছুই এই পোস্টে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ মানুষই বিভিন্ন এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে চাই। কিন্তু ইউরোপের কোন দেশে এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে গেলে তারা ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা চেয়ে বসে যার কারণে বাংলাদেশের অনেক মানুষ ইউরোপের দেশে যেতে পারে না। এখন যারা সরকারিভাবে বা বেসরকারিভাবে পর্তুগাল যেতে পারছেন না তাদের জন্য আরেকটি উপায় রয়েছে সেটি হলো স্পন্সর ভিসা।
স্পন্সরশিপ ভিসার মাধ্যমে পর্তুগাল প্রতিবছর হাজার হাজার বিদেশি ওয়ার্কারদের রিক্রুট করে থাকে তাদের দেশে ওয়ার্ক ভিসা দিয়ে কাজ করার জন্য। স্পন্সরশিপ ভিসা বাংলাদেশের অনেকের কাছেই নতুন মনে হতে পারে। কিন্তু এই স্পন্সারশিপ ভিসাই সবথেকে সহজ মাধ্যম ইউরোপের যে কোন দেশগুলোতে যাওয়ার। আপনারা যারা স্পন্সরশিপ ভিসা সরকারিভাবে যেতে চাচ্ছেন তাদের খরচ হবে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা। এই টাকা খরচ করে বাংলাদেশ থেকে আপনি খুব সহজেই পর্তুগাল যেতে পারবেন। শুধু আপনাদের কাজটি হলো কোম্পানিতে জবের জন্য আবেদন করা এবং সেখান থেকে জব ম্যানেজ করা।
পর্তুগাল ভিসার প্রকারভেদ
- স্বল্পকালীন ভিসা (সেনজেন ভিসা টাইপ সি): পর্যটন, ব্যবসা, পরিবার বা বন্ধুদের সাথে দেখা, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ইভেন্ট, বা স্বল্প মেয়াদী অধ্যয়ন বা প্রশিক্ষণের জন্য।
- দীর্ঘস্থায়ী ভিসা (জাতীয় ভিসার ধরন D): 90 দিনের বেশি থাকার জন্য, যেমন কাজ, অধ্যয়ন, বা পারিবারিক পুনর্মিলন।
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম কত এটা অনেকেই হয়তো জানেন না। বর্তমান সময়ে ইউরোপের যে কোন দেশে যেতে হলেই অনেক টাকা লাগে। কিন্তু আপনারা যদি সরকারিভাবে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে পারেন তাহলে খরচ অনেকটা কম। সরকারিভাবে পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম তিন থেকে চার লক্ষ টাকার মতন পড়বে আর যদি এজেন্সি অথবা দালালের মাধ্যমে যান তাহলে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।
পর্তুগালে কি কি কাজের চাহিদা বেশি
বর্তমান সময় পর্তুগালে অনেক কাজের চাহিদা রয়েছে। আমরা অনেকেই হয়তো পর্তুগালের কোন কাজের চাহিদা বেশি সেটি জানিনা। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক পর্তুগালে বর্তমান সময়ে কোন কোন কাজের চাহিদা বেশি রয়েছে।
- কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার।
- ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার।
- প্লাম্বার এবং ইলেকট্রিশিয়ান।
- এগ্রিকালচার ওয়ার্কার।
- সিজনাল ওয়ার্কার।
- ফার্ম ওয়ার্কার।
- হোটেল বয়।
- হোটেল সুপারভাইজার।
- হোটেল ক্লিনার।
- ডেলিভারি ড্রাইভার।
- ট্রাক ডাইভার।
- ক্রেন অপারেটর।
- ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার।
- সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।
পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি প্রয়োজন
পর্তুগালে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা জন্য অনেকগুলি নিয়ম ও নিবন্ধনের প্রয়োজন হতে পারে। নিম্নলিখিত তথ্যের ভিত্তিতে, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলি নিম্নলিখিত হতে পারে:
- পূরণ করা ভিসা আবেদনপত্র: পর্তুগিজ MFA ওয়েবসাইটে ডাউনলোডের জন্য উপলব্ধ৷
- বৈধ পাসপোর্ট: পর্তুগালে আপনার পরিকল্পিত থাকার পর কমপক্ষে তিন মাস বৈধ হতে হবে এবং কমপক্ষে দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি: দুটি সাম্প্রতিক ছবি Schengen ভিসার ছবির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।
- ভ্রমণের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা: ফ্লাইট রিজার্ভেশন এবং বাসস্থানের প্রমাণ সহ।
- ভ্রমণ বীমা: চিকিৎসা জরুরী এবং প্রত্যাবাসনের জন্য কমপক্ষে €30,000 এর কভারেজ, Schengen এলাকা জুড়ে বৈধ।
- আর্থিক উপায়ের প্রমাণ: ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, আয়ের প্রমাণ, বা স্পনসরশিপ একটি চিঠি দেখাতে যে আপনি আপনার থাকার সময় নিজেকে সমর্থন করতে পারেন।
- কাভার লেটার: আপনার সফরের উদ্দেশ্য এবং আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করা।
- ভিসা ফি প্রদান: সাধারণত প্রায় €80, যদিও এটি পরিবর্তিত হতে পারে।
আপনি অধিক নিশ্চিত ও আপডেটেড তথ্যের জন্য পর্তুগালের দূতাবাসে যোগাযোগ করতে পারেন এবং তাদের ওয়েবসাইটে পরিদর্শন করতে পারেন।
পর্তুগাল কাজের ভিসা অনলাইনে আবেদন করুন
পর্তুগাল কাজের ভিসার জন্য আপনাকে এজেন্সি অথবা দালাল ধরতে হবে না আপনি চাইলে সরকারিভাবেই পর্তুগাল যেতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে পর্তুগালের কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে অনলাইনে। অনলাইনে আবেদন আপনি নিজেই করতে পারবেন কিভাবে করবেন সেটির নিয়ম নিচে জানানো হলো।
- প্রথমেই আপনাদেরকে এই www.indeed.com ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
- এরপর একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
- আপনার ব্যক্তিগত সকল তথ্য প্রদান করুন।
- আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণ করুন।
- আপনার কাজের ট্রেনিং সার্টিফিকেট।
- এরপর সেখানে আপনার কাজের সিভি আপলোড করতে হবে।
- এরপর নিচের দিকে গিয়ে Review Your Application অপশনে ক্লিক করতে হবে।
- আপনার আবেদনটি রিভিউ করার পর সাবমিট ইয়ার অ্যাপ্লিকেশনে ক্লিক করে দিলেই আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে।
এখন কোম্পানির যদি আপনার কাজ পছন্দ হয় ডকুমেন্টস দেখার পর তাহলে তারা আপনার জিমেইলের মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দিবে।
পর্তুগাল ভিসা চেক
এখানে আপনাদের জানাতে চেষ্টা করব পর্তুগালের ভিসা চেক অনলাইনে কিভাবে করবেন। পর্তুগালের ভিসা চেক করতে পারবেন আপনার মোবাইলের মাধ্যমে। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক পর্তুগালের ভিসা কিভাবে চেক করে।
- প্রথমে আপনাকে এই www.vfsvisaonline.com ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
- ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনার সামনে একটি নতুন ইন্টারফেস ওপেন হবে।
- এরপর সেখানে Reference Number এবং Date Of Birth বসিয়ে নিচে একটি ক্যাপচা পূরণ করতে হবে।
- ক্যাপচা পূরণ করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করে দিলেই পর্তুগাল ভিসা চেক হয়ে যাবে।
গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা
- যোগ্যতা: নিশ্চিত করুন যে আপনি শেনজেন ইনফরমেশন সিস্টেমে কোনো প্রবেশ প্রত্যাখ্যান না থাকা সহ সমস্ত যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করেছেন।
- আর্থিক প্রমাণ: আপনার থাকার জন্য পর্যাপ্ত তহবিল দেখান।
- ভ্রমণ বীমা: বাধ্যতামূলক এবং নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করতে হবে।
আরো বিস্তারিত তথ্য এবং সহায়তার জন্য, আপনি Schengen Visa Info এবং Visa Guide World (SchengenVisaInfo)(ভিসাগাইড ওয়ার্ল্ড)
উপরন্তু, আপনার যদি পেশাদার সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আপনি অভিবাসন পরিষেবাগুলির সাথে যোগাযোগ করার কথা বিবেচনা করতে পারেন যেমন মোট আইন(মোট আইন)
শেষ কথা
আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। যদি আজকের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের শেয়ার করে দিন। এবং এরকম ভিসা সম্পর্কিত নিত্য নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে পোস্টগুলো পড়ুন।