ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ হচ্ছে জার্মানি। এই দেশ শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের অনেক মানুষেরই স্বপ্ন থাকে জার্মানি যাওয়ার। তবে আমাদের আগে জানতে হবে জার্মানি যাওয়া কতটা সহজলভ্য বাংলাদেশ থেকে কিরকম টাকা লাগতে পারে।
যেহেতু জার্মানি ইউরোপের সেনজেনভুক্ত দেশ এজন্য এই দেশের কাজের চাহিদা অনেক বেশি। এই দেশে গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম জব করে অনেক টাকা আয় করা যায় যার কারণে বাংলাদেশের অনেক মানুষের স্বপ্ন এই দেশে যাওয়ার। তবে আপনাকে জানতে হবে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে। আমরা আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি কয়েক রকম ভিসা যাওয়া যায় যেমন স্টুডেন্ট ভিসা, বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির জার্মানি ভিসা এবং বিজনেস ভিসা। তবে এই সমস্ত ভিসা দেওয়ার কিছু শর্ত রয়েছে নিচে সে শর্তগুলো এবং কত টাকা লাগবে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
- বাংলাদেশ থেকে যদি স্টুডেন্ট ভিসা জার্মানি যান তাহলে অবশ্যই আবেদনকারীদের একাউন্টে ব্লক মানি হিসেবে জার্মানির কোন ব্যাংকে ন্যূনতম ১৬ লাখ টাকা জমানত রাখতে হবে।
- বাংলাদেশ থেকে যদি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির জার্মানির ভিসায় যেতে চান, তাহলে জার্মানির কোন কোম্পানির কাছ থেকে চাকরির অফার লেটার সংগ্রহ করতে হয়।
- বাংলাদেশ থেকে আপনি বিজনেস ভিসায় জার্মানি যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আগ্রহীদের জার্মানিতে কমপক্ষে ১০ লাখ ইউরো ইনভেস্ট করতে হয়। তাছাড়া ১০ জন জার্মান নাগরিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হয়।
জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে
জার্মানি ইউরোপের অন্যতম উন্নত দেশ, যেখানে শিক্ষা, চাকরি ও ব্যবসার জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। অনেক মানুষ উচ্চশিক্ষা, চাকরি বা স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে জার্মানি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। তবে, জার্মানি যেতে কত টাকা খরচ হয়, তা নির্ভর করে ভিসার ধরন, টিকিট, আবাসন ও অন্যান্য খরচের উপর।
জার্মানিতে যাওয়ার খরচ ভিসার ধরন, থাকার জায়গা, জীবনযাত্রার মান এবং ব্যক্তিগত খরচের উপর নির্ভর করে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য গড়ে ১৫-১৮ লক্ষ টাকা এবং একজন চাকরিপ্রার্থী বা পর্যটকের জন্য ২-৫ লক্ষ টাকা প্রাথমিক খরচ হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে
জার্মানি, ইউরোপের একটি শিল্পোন্নত দেশ, উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং ব্যবসার জন্য বাংলাদেশিদের মধ্যে জনপ্রিয়। জার্মানিতে যাওয়ার খরচ ভিসার ধরন, প্রসেসিং পদ্ধতি এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। নিচে বিভিন্ন ভিসার জন্য আনুমানিক খরচ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপন করা হলো:
স্টুডেন্ট ভিসা:
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা একটি সাধারণ পথ। জার্মানির বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফি নেয় না; তবে শিক্ষার্থীদের ব্লকড অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ১১,৯০৪ ইউরো (প্রায় ১৬ লাখ টাকা) জমা রাখতে হয়, যা তাদের বার্ষিক জীবিকা নির্বাহের খরচ হিসেবে গণ্য হয়। ভিসা আবেদন ফি ৭৫ ইউরো। এছাড়া, অন্যান্য খরচ যেমন এজেন্সি ফি, বিমান টিকেট, সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন, স্বাস্থ্য বীমা ইত্যাদি মিলিয়ে মোট খরচ আনুমানিক ৫ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকার মধ্যে হতে পারে।
বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসা:
সরকারিভাবে জার্মানিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হওয়ায়, অনেকেই বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক ভিসার জন্য আবেদন করেন। এই প্রক্রিয়ায় খরচ এজেন্সি এবং চাকরির ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে ১০ লাখ থেকে ১৪ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
বিজনেস ভিসা:
জার্মানিতে ব্যবসা স্থাপনের জন্য বিজনেস ভিসা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এই ভিসার জন্য আবেদনকারীদের জার্মানিতে কমপক্ষে ১০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করতে হয় এবং ১০ জন জার্মান নাগরিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় খরচ উচ্চ হওয়ায়, এটি সাধারণত বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযোগী।
FAQ
জার্মানিতে পড়তে কত টাকা লাগে?
- জার্মানিতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে সাধারণত টিউশন ফি লাগে না বা খুব কম (প্রতি সেমিস্টারে প্রায় ১৫০-৩৫০ ইউরো, অর্থাৎ ১৮,০০০-৪০,০০০ টাকা)। তবে ব্যক্তিগত (প্রাইভেট) বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে ১০-২০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
- জার্মানিতে একজন ছাত্র হিসেবে থাকতে সাধারণত প্রতি মাসে ৮৫০-১২০০ ইউরো (প্রায় ১ লাখ-১.৫ লাখ টাকা) খরচ হয়। বছরে আনুমানিক ১০-১৪ লাখ টাকা লাগে।
শেষ কথা
আশা করি আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের সবাইকে জানাতে পেরেছি বাংলাদেশ থেকে জার্মানি হিসেবে কত টাকা লাগে। এছাড়াও আপনারা হয়তো জানতে পেরেছেন বাংলাদেশ থেকে সরকারি ভাবে জার্মানি যাওয়ার কোন উপায় নেই। এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের পোস্টগুলো ভিজিট করে পড়তে থাকুন।