ড্রাইভিং লাইসেন্স হচ্ছে প্রত্যেকটা গাড়ির দলিল স্বরূপ। ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মাধ্যমেই বোঝা যায় গাড়িটি বৈধ মালিকানা রয়েছে কিনা। গাড়ি কেনার সময় প্রত্যেকটা ব্যক্তিকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার সময় একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেটার মেয়াদ থাকে। সে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তখন সে ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন কাজে আসে না। তখন সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম। তাই আজকের এই পোস্টে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম জানাবো।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে কি কি লাগে?
- ন্যাশনাল আইডি কার্ড/জন্ম সনদ/ পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি।
- নির্ধারিত ফি জমাদানের রশিদ।
- পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
- সদ্য তোলা এক কপি পাসপোর্ট ও এক কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম
ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেই প্রত্যেকটা ব্যক্তির নতুন করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। আপনারা অনেকে আছেন যারা অনলাইন অনুসন্ধান করেন ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার পদ্ধতি। নিচে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম জানানো হলো।
অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম
- ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
- ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি।
- জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি।
- নাগরিক সনদপত্র (সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে)ফটোকপি ও সত্যায়িত কপি।
- পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি ছবি।
- আসল ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড।
ব্যাংক ডিপোজিট দেওয়ার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফটোকপি নিয়ে বিআরটিএ অফিসে নবায়ন অফিসারের কাছ থেকে সত্যায়িত করিয়ে নিতে হবে। যা ব্যাংকে জমা দেওয়ার সময় ব্যাংক ডিপোজিট ফরম এর সাথে জমা দিতে হবে। ব্যাংক ডিপোজিট এর পরিমাণ ২৪২৭ টাকা। এই টাকা জমা দেওয়ার পর একটি ব্যাংক রিসিভ পেপার দিবে সেটি আপনার কাছে যত্ন সহকারে রেখে দিতে হবে। আবেদনকারী কে দুই ধরনের ফরম ফিলাপ করতে হবে।
- নবায়ন ফরম পূরণের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো যদি আবেদনকারী বিবাহিত হন সে ক্ষেত্রে তার স্ত্রীর নামও মোবাইল নম্বর দিতে হবে। যদি বিয়ে না হয় সে ক্ষেত্রে তার বাবা নাম অথবা মার নাম দিতে হবে। আপনি চাইলে এই ফরম অনলাইনে ফিলাপ করতে পারবেন।
- মেডিকেল ফরম এর চেকআপ লিস্ট অনুযায়ী সকল বিষয় চেক করে ফরমটি একজন এমবিবিএস ডাক্তার দ্বারা মেডিকেল টেস্ট করিয়ে তা সত্যায়িত করিয়ে নিয়ে জমা দিতে হবে বিআরটিএর অফিসে। এই ফরমটা আপনি বিআরটি এর অফিসের আশেপাশের দোকানগুলোতেই পেয়ে যাবেন।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে নবায়ন পদ্ধতি হলো
- অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের যে সকল ডকুমেন্ট দরকার তার সাথে পুলিশ তদন্তের প্রতিবেদন সত্যায়িত করতে হবে।
- পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন যে করবে সেই ব্যাক্তির যদি উপরোক্ত সকল ডকুমেন্টস ঠিকঠাক থাকে তাহলে ওই দিন অথবা তারপর দিন চাইলে একটা ডুব্লিকেট ড্রাইভিং লাইসেন্স সে পাবে। যা দিয়ে তিনি তার বায়োমেট্রিক্স এসএমএস না আসা পর্যন্ত আপনি সকল গাড়ি চালাতে পারবেন।
- বায়োমেট্রিক এস এম এস আসলে বা আপনাকে কোন নির্দিষ্ট তারিখ দেওয়া থাকলে সেই তারিখ অনুযায়ী আপনাকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তুলে আসতে হবে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তুলে আসার সময় সেদিন একটি কম্পিউটার কপি পাবেন।
- ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তোলার তিন মাস পর সে কম্পিউটার কপি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিআরটিএ অফিসে আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে কত টাকা লাগে
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেটা আবার নবায়ন করতে গেলে আপনার কিছু টাকা প্রয়োজন হবে। আমাদের মাঝে এমন অনেকে আছে যারা জানেনা ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে কত টাকা লাগে। এখান থেকে জেনে নিতে পারবেন ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে কত টাকা লাগে।
- অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ১০ বছরের নবায়ন ফি সহ সর্বমোট ৪,৪৯৭ টাকা।
- পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ০৫ বছরের নবায়ন ফি সহ সর্বমোট ২,৭৭২ টাকা।
- এই পেমেন্টটা শুধু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই গ্রহণযোগ্য।
- যদি ১৫ দিন পার হয়ে যায় প্রতি বছরের জন্য ৫১৮ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
শেষ কথা
এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের জানাতে চেষ্টা করেছি কিভাবে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম। এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে পোস্টগুলো করতে থাকুন।