ক্রোয়েশিয়া ইউরোপ মহাদেশের সেনজেন ভুক্ত একটি রাষ্ট্র। এই দেশের জনসংখ্যা অনেক কম। তবে এই দেশের কাজের মান অনেক উন্নত, যার কারন সারা বিশ্বের অনেক মানুষ কাজের উদ্দেশ্য ক্রয়েশিয়া যেতে চায়। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ জানে না ক্রোয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি। আমরা আজকের এই পোস্টে আলোচনা করব ক্রোয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং ক্রোয়েশিয়া বেতন কত?
ক্রোয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
আপনি যদি ক্রয়েশিয়া কাজের ভিসায় যেতে চান তাহলে আপনার জানা প্রয়োজন ক্রয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি। কেননা এই দেশে অন্যান্য কাজের তুলনায় যেসব কাজের চাহিদা বেশি সেই সব কাজে বেতন অনেক বেশি। তাই ক্রয়েশিয়া কাজের ভিসায় যাওয়ার আগে আপনার জেনে নেওয়া প্রয়োজন কোন কাজের চাহিদা বেশি। ক্রোয়েশিয়া যেসব কাজের চাহিদা বেশি তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
- ইলেকট্রিশন, মেকানিক্যাল, হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, জব ড্রাইভিং, ফুড ডেলিভারি ম্যান, কন্সট্রাকশন শ্রমিক, সেলসম্যান, ক্লিনার, কৃষিকাজ, ফুট প্যাকেজিং ম্যান, টাইলসের কাজ ও গবাদি পশু পালন ইত্যাদি।
ক্রোয়েশিয়া বেতন কত
ক্রয়েশিয়া বেতন নির্ধারন করা হয় কাজের উপর ভিত্তি করে। আপনার যদি কাজের উপর অভিজ্ঞতা বেশি থাকে তাহলে আপনি বেতন অন্যান্য শ্রমিকদের থেকে বেশি পাবেন। কত টাকা পেতে পারেন অনেকেই জানেন না? ক্রয়েশিয়া যেকোনো কাজের সর্বোনিম্ন বেতন ৭০০ থেকে ৮০০ ইউরো পর্যন্ত হয় ( বাংলাদেশি টাকায় ৭৫ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকা )। এই দেশে সর্বোচ্চ বেতন প্রায় ১৫০০ থেকে ২০০০ ইউরো ( বাংলাদেশি টাকায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত )।
ক্রয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম
বর্তমান সময়ে আপনি নিজেই ঘরে বসেই ক্রয়েশিয়ার ভিসা আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু কিভাবে আবেদন করবেন সেটা জানেন না। নিম্নে উল্লেখ করা হলো কিভাবে আপনারা ক্রয়েশিয়ার ভিসা আবেদন করবেন।
- ক্রয়েশিয়া ভিসা আবেদন করার জন্য প্রথমে https://crovisa.mvep.hr/VisaRequestFormPage1.aspx এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
- তারপর আপনার সামনে একটি ফরম চলে আসবে যেটা আপনার নিজের তথ্য দিয়ে পূরন করতে হবে।
- আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আবেদন ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। অনলাইন ফি সাধারনত ৬০ থেকে ৮০ ইউরো।
- এরপর ভিসা সেন্টার বা দূতাবাসে আবেদন জমা দেওয়ার জন্য একটি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন। এবং সেখানে গিয়ে আবেদন ফরমটি দূতাবাসে জমা দিতে হবে।
- অনলাইনে ফর্ম পূরণের পর, নিকটস্থ ক্রোয়েশিয়া দূতাবাস বা ভিসা সেন্টারে যেতে হবে। সমস্ত ডকুমেন্টের মূল কপি এবং ফর্ম জমা দিতে হবে।
- এরপর ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার পরে অনলাইনে স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। প্রক্রিয়াটি সাধারণত ১৫-২০ কার্যদিবস সময় নেয়।
ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রয়েশিয়া কাজের উদ্দেশ্য যায় মানুষ। বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন রকম খরচ হতে পারে। তবে বাংলাদেশ থেকে ক্রয়েশিয়া কাজের ভিসায় যেতে ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকার মতন লাগে। আর ভিজিট ভিসায় ক্রয়েশিয়া গেলে ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যেই যাওয়া যায়।
ক্রোয়েশিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
ক্রোয়েশিয়ার মুদ্রার নাম কুনা (HRK) ছিল, তবে ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ক্রোয়েশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে তাদের জাতীয় মুদ্রা পরিবর্তন করে ইউরো (€) গ্রহণ করেছে।
১ ইউরো = কত টাকা (বাংলাদেশি টাকা – BDT)
বর্তমানে, ১ ইউরোর মান প্রায় ১১৫-১২২ টাকা (BDT) এর মধ্যে ওঠানামা করে। এটি নির্ভর করে আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজার এবং বিনিময় হার পরিবর্তনের উপর।
- যদি আপনি ক্রোয়েশিয়ার ১ টাকা বলতে ইউরো বোঝান, তাহলে:
১ ইউরো ≈ ১২০ টাকা (প্রায়)। - যদি আপনি পুরোনো মুদ্রা কুনা (HRK) বোঝান, সেটির মান ২০২৩ সাল থেকে প্রাসঙ্গিক নয়, কারণ কুনা আর ব্যবহার করা হচ্ছে না।
শেষ কথা
বর্তমান সময়ে ক্রয়েশিয়ার অনেক বিজ্ঞাপন দেখতে পারবেন যেগুলোতে বিভিন্ন কাজের চাহিদা অনেক বেশি দেখায়। তারা বলে দেয় কোন কাজে গেলে ভালো হবে। আপনি এই বিজ্ঞাপন গুলো না দেখে গুগল থেকে খবর কালেক্ট করে এবং এজেন্সির সাথে কথা বলে নেওয়া ভালো। কারন বাংলাদেশের অনেক দালাল আছে যারা প্রতারনা করে। তাই তাদের পাল্লায় না পরে নিজে এজেন্সির সাথে কথা বলে ক্রয়েশিয়া যাওয়ার কথা ভাববেন। আশা করি আজকের এই পোস্ট থেকে জানতে পেরেছেন ক্রোয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি।